২০শে মে, ২০২৫ ইং, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১শে জিলক্বদ, ১৪৪৬ হিজরী

রাজশাহীর বিআরটিএ অফিস দালালদের আঁখড়ায় পরিণত! ।। মাদারল্যান্ড নিউজ

জামি রহমান,নিজস্ব প্রতিনিধি: নতুন সড়ক আইনের কারণে গাড়ির কাগজপত্র হালনাগাদ এবং লাইসেন্স তৈরির জন্য রাজশাহী বিআরটিএ কার্যালয়ে গ্রাহকদের ভিড় দিন দিন বেড়েই চলেছে। ভিড়ের সঙ্গে বেড়েছে চরম ভোগান্তিও বলে অভিযোগ উঠেছে।দালাল না ধরে এখানে কোনো কাজ সহজভাবে করতে পারছেন না গ্রাহকরা। গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে আসা সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে দালালদের মাধ্যমে সংশ্নিষ্টরা বাড়তি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন গ্রাহকরা।
ড্রাইভিং ও গাড়ির লাইসেন্স করার ভীড় বাড়ার সুযোগ নিয়ে দালাল চক্র বিআরটিএ অফিসে যেন ঘুষের হাট বসিয়েছেন। দালালদের এই দৌরাত্ম্য অফিসের সংশ্নিষ্ট ব্যাংক পর্যন্ত গড়িয়েছে।
কোন গ্রাহক যদি বিআরটিএ অফিসে দালালচক্র বাদে নিজের গাড়ির কাগজ রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে গ্রাহকের হয়রানির আর শেষ থাকে না বা কোন গ্রাহক দালালচক্র ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে গেলে তার কপালে কখনো ড্রাইভিং লাইসেন্স জোটে না।
রাজশাহী বিআরটিএ অফিসে গ্রাহকের গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে বৈধ কাগজপত্র থাকলেও গ্রাহক হয়রানির শিকার হতে হয়। এ কাগজ পত্র নাই সে কাগজপত্র নাই বলেই গ্রাহক হয়রানি করে রাজশাহী অফিস কর্তৃত্ব অযথা হয়রানির হতে হয়।
একই কাগজপত্র আবার দালালদের মাধ্যমে দিলে সঠিক হয়ে যায় আর গ্রাহক নিজে দিলেঅবৈধ কাগজপত্র হয়ে যায়। আর দালালদের মাধ্যমে দিলে সেই কাজপত্র দ্রুত আর গ্রাহক সেই কাগজপত্র জমা দিতে গেলে গ্রাহককে একাধিকবার রাজশাহী বিআরটিএ অফিসে ৮/১০ দিন ধরনা ধরতে হয়।
বিআরটিএ অফিসে দালাল চক্র ছাড়া কোন প্রকার বৈধভাবে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন লাইসেন্স বা ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে গেলে সেই গ্রাহকের কপালে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন লাইসেন্স বা ড্রাইভিং লাইসেন্স জোটে না। লাইসেন্স পাওয়ার জন্য বিআরটিএ অফিসে কাগজপত্র জমা দিতে গেলে অফিসের কেউ বিন্দুমাত্র সহযোগিতা করছেন না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত এখানে রয়েছে গ্রাহকদের ভীড়। অফিসের ভেতরে ও বাইরে ৫ থেকে ১০জনের দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে। দালালরা প্রতি ফাইল ৪/থেকে ৬ হাজার টাকা বেশী (বলছে অফিস খরচ) হাতিয়ে নিচ্ছে। ডিজিটাল রেজিষ্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের লিখিত ও ব্যবহারীক পরীক্ষায় শতভাগ পাশের গ্যারান্টি দিয়েই টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে দালাল চক্রের সদস্যরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক দালাল জানায়, অতিরিক্ত টাকার একটা অংশ প্রতিমাসে ভাগবাটোয়ার করা হয়, অফিসের কতিপয় অসাদু কর্মকর্তার মাঝে।
মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য বিআরটিএ অফিসে আসা মাহাতাব আলী হোসেন নামে এক ব্যক্তি জানান, এক দালাল ৭হাজার টাকা দাবি করে বললেন, কোথাও যেতে হবে না। সবই আমি করে দেবো। পরীক্ষার দিন উপস্থিত হলেই চলবে।
গোলাম আলী হায়দার নামে এক ভুক্তভোগী জানান, বিআরটিএ অফিসের ভীতরে কোনো নিয়ম শৃঙ্খলার লেসমাত্রই নেই। দালালরা নিজে সীল মারছে এবং টেবিল কিংবা আলমিরা থেকে ফাইল নিজ হাতে বের করে প্রয়োজনীয় কাগজ বাহির করছে। অর্থ্যা যে যার মতো করে কাজ করছে। দালালদের কাজ দেখে মনে হচ্ছিল তারাই অফিসের হরতাকর্তা কিংবা অফিস স্টাফ।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিআরটিএ এর সহকারী পরিচালক ইঞ্জি. এ.এস.এম কামরুল হাসান বলেন,পরীক্ষায় কোন অনিয়মের সুযোগ নেই। কেউ টাকা নেয় বলে আমার জানাও নাই। কারো বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে

Share Button


     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ